মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মহান প্রিয় নবীর প্রেম অর্জনে ওলীকূল স¤্রাট কাদেরিয়া তরীকার প্রর্বতক মহান ইমাম গাউসে পাক ইমাম শেখ সাইয়্যেদ আব্দুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহের পবিত্র ওফাত ফাতেহায়ে ইয়াজদহম উপলক্ষে গত ৭ই ডিসেম্বর শনিবার নিউইয়র্ক জ্যাকসন হাইটস্থ ইত্যাদি গার্ডেন পার্টি হলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর উদ্যোগে “শানে গাউসুুল আজম মাহফিল” অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হাফেজ মাওলানা আব্দুর রহিম মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রধান মেহমান হিসাবে তকরীর করেন আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেমে দ্বীন শায়েখ আল্লামা আবু সুফিয়ান আল-কাদেরী।

বাদ মাগরিব থেকে মধ্যরাতব্যাপী মাহফিল শুরু হয় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও না’ত শরীফ পাঠের মাধ্যমে। মাহফিল পরিচালনা করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকী। বক্তব্য রাখেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর কার্যকরী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ হেলাল মাহমুদ, সহ-সভাপতি মাওলানা আনোয়ার কাদেরী, মুহাম্মদ নাদের, মুহাম্মদ মুরাদ মুজাদ্দেদী ও মনিরুল ইসলাম মোমেন, সহ-সাধারন সম্পাদক ওমর ফারুক, মোতাসিম বিল্লাহ দুলাল, নজরুল ইসলাম ও উপদেষ্টাবৃন্দঃ কাজী নয়ন, আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, হাজী আব্দুর রহমান, মীর মশিউর রহমান, মাওলানা আব্দুর রহীম, মুহাম্মদ ইসহাক, শিমুল হাসান, বিশিষ্ট সাংবাদিক রিমন ইসলাম, কার্যকরী সদস্য আব্দুল আজিজ, ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন আহমেদ, মুহাম্মদ কবির আহমেদ ও সম্পাদক সানাউল হক, ইস্কান্দর হাশেমী, নাজমুল গনী প্রমুখ।

প্রধান মেহমান শায়েখ আল্লামা আবু সুফিয়ান আল কাদেরী বলেন, নবীপ্রেম হলো ঈমানের মূল, আর ওলীপ্রেম হলো নবীপ্রেমের পূর্বশর্ত। আর তাই ওলীপ্রেমহীন ইসলাম প্রকৃত ইসলাম নয়। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে তিনি বলেন অসংখ্য আয়াত শরীফ ও হাদিসসমূহে ইমামত ও বেলায়েতের উল্লেখ থাকার পরেও যারা ইমাম ও ওলীদের বিরুদ্ধাচরন করে, তাদেরকে চিহ্নিত করে সরলপ্রাণ মুসলমানদের ঈমান রক্ষায় আমাদের সবাইকে আহলে সুন্নাতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাতেল ফেরকা সমূহের প্রাদুর্ভাব রুখতে হবে। তিনি আরও বলেন হাদিস শরীফে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, মহান প্রিয়নবী (সাঃ) বলেছেন আমার প্রত্যেক্ষ সময়ের পর, আরও তিনটি প্রজন্ম সম্মিলিতভাবে ঈমান ও দ্বীনের দলিল। আর তাই প্রথম প্রজন্মঃ আহলে বায়েত, খোলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবায়ে কেরাম, দ্বিতীয় প্রজন্মঃ তাবেয়ীন, তৃতীয় প্রজন্মঃ তাবে তাবেঈন ও চতুর্থ প্রজন্ম ঃ আইম্মায়ে মুজতাহেদীন তথা মজহাবের ইমামবৃন্দ। তৎপরবর্তীতে সেই চার প্রজন্মের আনুগত্যের ধারাবাহিকতায় ইমামত ও বেলায়েতের সর্বশেষ সংযোজন তরীকতের ইমামগন যাঁদের সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন গাউসুল আজম ইমাম আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ)। তাঁর পরবর্তীতে ইমাম মুঈনুদ্দীন চিশতি, ইমাম বাহাউদ্দীন নক্শবন্দী, ইমাম আহমদ আল ফারুকী আল মুজাদ্দেদী (রাঃ) প্রমুখগন সারা পৃথিবীতে ঈমান-দ্বীন প্রচার ও মুসলিম মিল্লাতের প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন যা সর্বজনবিদিত। আর তাই ঈমানের তাকিদে, প্রকৃত তাকওয়া অর্জনে ও পরিপূর্ণ ধর্ম পালনে সকল মুসলমানকে সাহাবায়ে কেরাম, ইমামবৃন্দ ও আওলিয়ায়ে কেরামের আনুগত্যে থাকা অত্যাবশ্যক যা ব্যতিরেকে ঈমান পরিপূর্ণ হয়না। শায়েখ আল্লামা আবু সুফিয়ান আল কাদেরী উল্লেখ করেন যে, বেলায়েতের প্রতি আনুগত্যের শ্রেষ্ঠ প্রমান হলো ওলীকুল স¤্রাট গাউসুল আজম ইমাম আব্দুল কাদের জ্বিলানী (রহঃ) এর প্রতি আনুগত্য, যার প্রেমময় বহিঃপ্রকাশ হল “শানে গাউসুুল আজম মাহফিল” পালন। পরিশেষে শায়েখ আল্লামা আবু সুফিয়ান আল-কাদেরী আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সবাইকে স্বীয় ঈমান রক্ষা ও ধর্মের মূলধারায় থেকে দ্বীন ও মিল্লাতের খেদমত করার আহ্বান জানান। সালাতু সালাম তথা মিলাদ-ক্বিয়াম-দরূদ পাঠান্তে বিশ্ব মানবতার প্রকৃত মুক্তি কামনায় বিশেষ মুনাজাত ও তবারুক বিতরণের মাধ্যমে মাহফিল সমাপ্ত হয়।