প্রায় ৮ বছর ধরে বাংলাদেশি দর্শকদের প্রধান থিয়েটার ছিল নিউইয়র্কের জ্যামাইকা মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা। এখানে বাংলাদেশি জনপ্রিয় অনেক ছবি প্রদর্শিত হয়েছে। এই থিয়েটারের লবিতে পা রেখেছেন মেগাস্টার শাকিব খান, জয়া আহসান, আরিফিন শুভ এবং অভিনেত্রী তারিনসহ আরো অনেকে। তাইতো এই থিয়েটার নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে প্রবাসী বাঙালিদের মনে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো ২০১৭ সাল থেকে চলে আসা এই জ্যামাইকা মাল্টিপ্লেক্সে আর প্রদর্শিত হবে না কোনো ছবি। এটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
গত ৩০ এপ্রিল ‘ওমর’ ছবিটি ছিল জ্যামাইকা মাল্টিপ্লেক্সে প্রদর্শিত শেষ বাংলা ছবি।
জানা গেছে, এখানে বায়োস্কোপ ফিল্মস এবং স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো’র ব্যানারে সর্বমোট ৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
সর্ব প্রথম এই থিয়েটারে জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের রচিত উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রায়িত এবং জয়া আহসান অভিনীত দেবী ছবিটির সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনের আয়োজন করে বায়োস্কোপ ফিল্মস। এই প্রেক্ষাগৃহে টানা ৫ সপ্তাহ ৮৯টি শো করে রেকর্ড স্থাপন করে দেবী।
এরপর প্রায় প্রতি মাসে এখানে বাংলা ছবির আয়োজন বসতো। একে একে হাওয়া, পরাণ, সুরঙ্গ, প্রিয়তমা এবং দামাল, গলুই, শাপ্লুডু ছবি প্রদর্শিত হয়।
২০২২ সালে এই হলের সারা বছরের সর্বোচ্চ আয়ের ১০টি সিনেমার মধ্যে ৩টি বাংলাদেশের ছবি – হাওয়া , পরাণ এবং দামাল ছিল। এটা ছিল উত্তর আমেরিকায় বাংলা চলচ্চিত্র ইতিহাসের একটি মাইলফলক।
এখন এই মাল্টিপ্লেক্স বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ‘দেয়ালের দেশ’ ছবিটি কিউ গার্ডেনে অবস্থিত কিউ গার্ডেন সিনেমা হলে সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শিত হবে।
১৭ মে শুক্রবার বায়স্কোপ ফিল্মসের ব্যানারে মিশুক মনি পরিচালিত ‘দেয়ালের দেশ’ মুক্তি পাচ্ছে।
কিউ গার্ডেন সিনেমা হল ১৯৩০ সালে নির্মিত। গত বছর সম্পূর্ণভাবে মেরামত করা হয় এটি।
জ্যামাইকা মাল্টিপ্লেক্স বন্ধ হওয়ায় প্রকাশ করেন বায়োস্কোপ ফিল্মসের কর্ণধার রাজ হামিদ এবং নওশাবা রশিদ।
তারা জানান, ৬ বিলিয়ন ডলারের রি-ডেভলাপমেন্টের প্লানিংয়ে এই প্রেক্ষাগৃহটির স্থান হয়নি। লা গুয়ারডিয়া থেকে ম্যানহাটন পর্যন্ত দ্রুতগামী ট্রেনের স্টেশন , ২ ব্লক জুড়ে শপিংমল স্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এখানে।
তারা বলেন, তবে বাংলা ছবির দর্শকদের জন্য বাংলা ছবি প্রদর্শনে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আগামী জুন মাসে আমরা ‘তুফান’ সহ বেশ কয়েকটি নতুন ছবি নিউ ইয়র্ক থিয়েটারে দেখানোর আশা রাখি ।