ডিবির গুলশান বিভাগে যখন ছিলেন, তখন নায়িকা পরীমণির সঙ্গে দেখা হয় গোলাম সাকলায়েনের। দেখা থেকে শুরু হয় যোগাযোগ। এরপর ধীরে ধীরে সাকলায়েনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় পরীমণির। একপর্যায়ে পরীমণির বাসায় নিয়মিত রাতযাপন করতে শুরু করেন সাকলায়েন। এমনকি রাজারবাগ মধুমতী পুলিশ অফিসার্স কোয়ার্টার্সে সাকলায়েনের বাসায়ও যান নায়িকা। সেখানে প্রায় ১৭ ঘণ্টা অবস্থান করে রাত দেড়টায় পরীমণি বাসা থেকে বেরিয়ে আসেন।
পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। সেখানে বলা হয়েছে সাকলায়েনের সঙ্গে পরীমণির অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেই জেরে চাকরি হারাচ্ছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েন। তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মতামত চেয়েছে তারা।
![পরীমনি](https://www.usabanglanews.com/ubeenood/2024/06/pori_sak20210811140735-2406250609-1.jpg)
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পিএসসিকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, তদন্তে উঠে এসেছে যে, পরীমণির সঙ্গে সাকলায়েনের বিবাহবহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। সাকলায়েন পরীমণির বাসায় গিয়ে থাকতেন। আর সাকলায়েনের স্ত্রী তার সরকারি বাসায় না থাকায় পরীমণি গিয়ে সেখানে রাতে থাকতেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সাকলায়েন ডিবির গুলশান বিভাগে থাকার সময় পরীমণির সঙ্গে ঘটনাক্রমে দেখা হয় তার। এরপর শুরু হয় যোগাযোগ। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি নায়িকা পরীমণির বাসায় নিয়মিত রাতযাপন করতে শুরু করেন।
পুলিশ অধিদপ্তরের এলআইসি শাখা (বৈধ আড়িপাতার দায়িত্বে থাকা) থেকে পাওয়া সাকলায়েনের মোবাইলের সিডিআর (বিস্তারিত কল রেকর্ড প্রতিবেদন) বিশ্লেষণ করে তদন্তকারীরা দেখেছেন, ২০২১ সালের ৪ জুলাই থেকে পরের এক মাসে সাকলায়েন বিভিন্ন সময়ে (দিন-রাতে) নায়িকা পরীমণির বাসায় অবস্থান করেন।
নায়িকা পরীমণির মোবাইলের ফরেনসিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় তদন্তকারীরা দেখেছেন, পরীমণির সঙ্গে সাকলায়েনের কথোপকথন চলতো। তা সাধারণ পরিচিতি বা পেশাগত প্রয়োজনে স্থাপিত কোনো সম্পর্কের নয়, বরং অনৈতিক প্রেমের সম্পর্ক।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, রাজারবাগ মধুমতী পুলিশ অফিসার্স কোয়ার্টার্সে পরীমণির যাতায়াতের সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। এর ফরেনসিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে ও সাক্ষীদের জবানবন্দি অনুযায়ী প্রতীয়মান হয় যে, সাকলায়েনের পূর্বপরিকল্পনা ও সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারে তার স্ত্রী না থাকা অবস্থায় পরীমণি তার (সাকলায়েন) রাজারবাগের সরকারি বাসায় যান। সেখানে প্রায় ১৭ ঘণ্টা অবস্থান করে ২০২১ সালের ২ আগস্ট রাত দেড়টায় বাসা ত্যাগ করেন পরীমণি।
সাকলায়েন পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হয়ে সরকারি দায়িত্বের বাইরে নায়িকা পরীমণির সঙ্গে অতিমাত্রায় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে।
এতে বলা হয়, সাকলায়েন বিবাহিত ও এক সন্তানের জনক। এরপরও পরীমণির সঙ্গে তার বিয়েবহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, পরীমণির সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন এবং নিজের সরকারি বাসভবনে নিজ স্ত্রীর অবর্তমানে সময় কাটানোর মতো ঘটনা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।