১০ নভেম্বর (রোববার) ঐতিহাসিক শহীদ নূর হোসেন দিবস। দিনটি ঘিরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগকে বিক্ষোভ করতে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করছে অন্তর্বর্তীকলীন সরকার।
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী গণ-আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর গুলিস্তানে জিরো পয়েন্ট এলাকায় (বর্তমান শহীদ নূর হোসেন স্কয়ার) পুলিশের গুলিতে শহীদ হন যুবলীগ নেতা নূর হোসেন।
বুকে-পিঠে গণতন্ত্র মুক্তি পাক/স্বৈরাচার নিপাত যাক লিখে বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে পুলিশ তাকে গুলি করে। এরপর থেকে দিনটি ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ হিসেবেও পালিত হয়ে আসছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর মাঠে নামতে পারেনি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটির নেতাকর্মীরা। গত ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার রোষানলে পড়তে হয় দলটির নেতাকর্মীদের। এর মধ্যে আবার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ অবস্থার মধ্যেই নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকার জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ।
ওই পোস্টে বলা হয়, আগামী ১০ নভেম্বর রোববার বিকেল ৩টায় শহীদ নূর হোসেন চত্বরে অগণতান্ত্রিক শক্তির অপসারণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
মিছিলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী সাধারণ মানুষকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। একইসঙ্গে দেশব্যাপী সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
পোস্টে আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, ‘গণহত্যাকারী ও নিষিদ্ধ সংগঠনের কেউ কর্মসূচি করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’
আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদী দল উল্লেখ করে তাদের কোনো কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, তাদের কর্মসূচি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পূর্ণশক্তি দিয়ে মোকাবিলা করবে।
ফেসবুক পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, আওয়ামী লীগ বর্তমানে যে রূপে আছে তাতে এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলের বাংলাদেশে বিক্ষোভ করার কোনো সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশে কেউ সমাবেশ, মিছিল করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ণশক্তি দিয়ে সেগুলো মোকাবিলা করবে। অন্তর্বর্তী সরকার সহিংসতা বা আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো প্রচেষ্টাকেই বরদাশত করবে না।
এছাড়া, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানীতে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির ঘোষণার পর, এবার সেই কর্মসূচির প্রতিবাদ ও স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে একইস্থানে পাল্টা গণজমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।