নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজীম আনারের মরদেহ কলকাতার নিউ টাউন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুজন গ্রেফতার হয়েছেন। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে তাকে খুন করা হয়েছে।
বুধবার (২২ মে) সকালে কলকাতা২৪ নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল সাইট এমপির মরদেহ উদ্ধারের খবর জানিয়েছে।
ওই পোর্টালটিতে বলা হয়েছে, ভোটের মুখে খাস কলকাতায় বড় ঘটনা ঘটে গেল। খুন হয়ে গেলেন বিদেশি সংসদ সদস্য। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল কলকাতার নিউটাউন এলাকায়। মৃতের নাম আনোয়ার উল আজিম তিনি বাংলাদেশের সাংসদ বলে জানা গিয়েছে। ইতোমধ্যে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।
কলকাতার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, নিউ টাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন নামের বিলাসবহুল একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে পাওয়া গেছে বাংলাদেশের এ সংসদ সদস্যের লাশ।
কলকাতার দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন তাদের অনলাইন সংস্করণে লিখেছে, ‘খুন করা হয়েছে’ আনোয়ারুল আজিম আনারকে। নিউ টাউন থানার পুলিশ এবং বিধান নগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ ও এইচডিএফ কর্মকর্তারা তদন্তে নেমেছেন। ওই আবাসনের সিসিটিভি ভিডিও তারা খতিয়ে দেখছেন।
গত ১২ মে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এমপি আনার। নদীয়া সীমান্ত অতিক্রম করার পর সন্ধ্যায় কলকাতার অদূরে ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকার বরাহনগর থানার ১৭/৩ মন্ডলপাড়া লেনের স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে পৌঁছান। পরদিন দুপুর ১টা ৪০ নাগাদ ওই বাড়ি থেকে কিছুটা হেঁটে বিধানপার্ক কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে গিয়ে একটি গাড়িতে উঠেন। ওই সময় তিনি হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন। সেই দৃশ্য দেখেছেন গোপাল বিশ্বাসের পরিচিত শুভজিৎ মান্না।
তবে সন্ধ্যায় গোপাল বিশ্বাসের মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ম্যাসেজ আসে, তিনি (এমপি আনার) রাতে ফিরছেন না, দিল্লি যাচ্ছেন। এ সময় যাতে তাকে আর ফোন না করা হয়। তিনি দিল্লি পৌঁছে নিজেই ফোন করবেন- এমনটাও ম্যাসেজে লেখা ছিল।
এরপর আনারকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। তিন দিন পর ১৫ মে সকাল সোয়া ১১টায় তিনি শেষ ম্যাসেজে জানান, দিল্লি পৌঁছে গেছেন। তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন।
কলকাতার বরাহনগর থানায় ১৮ মে লিখিত মিসিং ডায়েরিতে এসব তথ্য উল্লেখ করেন ভারতে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস।
এর আগে ভারতে যাওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এই সংসদ সদস্যের। রোববার (১৯ মে) পরিবারের পক্ষ থেকে তিনদিন ধরে এমপির সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার বিষয়টি রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে অভিহিত করা হয়।
সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ জানান, গত ১১ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। কিন্তু এরপর তিন দিন পার হলেও পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি। তিনি আরও জানান, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা বিভাগ বিষয়টি তদারকি করছে।
আনোয়ারুল আজীম ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।