জলি আহমেদ….
বৈশাখ মানেই নতুন বছর। বৈশাখ মানেই মেলা, উৎসব–পার্বণে শামিল হওয়া। পুরোনোকে বিদায় জানানো। আরএই উৎসব যে শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ তা কিন্তু নয়। প্রবাসে থেকেও বাঙালিরা বৈশাখ উদযাপন করেন। এরইধারাবাহিকতায় সুদূর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বৈশাখী আড্ডায় মেতেছিলেন বাঙালিরা।
রোববার (৫ মে) নিউইয়র্কের আগ্রা প্যালেসে ‘বৈশাখী আড্ডা’র আয়োজন করে নিউইয়র্ক সিটি বাংলাদেশি সিভিল সার্ভিস সোসাইটি (এনবিসিএস)। এ আড্ডায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা পরিবারসহ উপস্থিত হন।
নারীরা পরেন রঙ বেরঙের শাড়ি। ছেলেরা পরেন পাঞ্জাবি। শিশুরাও বাঙালি সাজে উপস্থিত হয়। এ যেন সুদূরআমেরিকায় ছোট্ট এক বাংলাদেশ।
‘বৈশাখী আড্ডা’য় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন ছিল। একই সঙ্গে ছিল বাঙালি নানা খাবার। যেমন ইলিশ মাছ, ভর্তা–ভাত, ঝাল মুড়ি, পিঠাপুলিসহ আরও অনেক কিছু। পুরো অনুষ্ঠানস্থল সাজানো হয় বৈশাখী ঢঙ্গে। এমন আয়োজনে বড়দের সঙ্গে বাচ্চারা অংশ নিয়ে অনেক খুশি।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করা হয় ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানটি। এরপর ‘টাকডুম টাকডুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল’ গান পরিবেশন করেন মাহবুব। এছাড়া জনপ্রিয় গান ‘তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা’ গেয়ে শোনান কাজি। আর জুয়েল ‘রূপ সাগরে ঝলক মারিয়া’ এবং ‘মেলায় যাই রে’ গানে অনুষ্ঠানস্থল মাতিয়ে তুলেন। তার সঙ্গে উপস্থিত দর্শকরাও নেচে–গেয়ে আরও প্রাণবন্ত করে তোলেন অনুষ্ঠান।
এছাড়া সোহেলের হাওয়াইয়ান গিটারের সূরের মূর্ছনায় আগ্রা প্যালেসের পরিবেশ এক প্রশান্তিময় হয়ে ওঠে। আর ‘ধিকি ধিকি আগুন জ্বলে’ পরিবেশন করেন আরিফ আহমেদ অর্ণব।
এছাড়া নিউইয়র্কের বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী রাজিব তার অসাধারণ পাফরমেন্সে মুগ্ধ করে তুলেন উপস্থিত অতিথিদের। সবশেষ অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ কৃষ্ণা তিথী গান গেয়ে শোনান।
গান ছাড়াও নাচ ও কবিতা আবৃতি করা হয়। এরমধ্যে নিউইয়র্কের ছোট্ট লিয়ানার নাচ যেন পরিপূর্ণতা এনে দেয় বৈশাখী আড্ডার। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মূলত পারফর্ম করেন এনবিসিএসের সদস্যরা। প্রত্যেকটি পারফর্ম ছিল স্মরণ রাখার মতো।
প্রবাসের মাটিতে বেড়ে ওঠা শিশু–কিশোরদের বাংলাদেশের নিজস্ব কৃষ্টি কালচার ও উৎসবের সঙ্গে পরিচিতি এবংযুক্ত থাকার উদ্দেশ্যে এই আয়োজন।
এনবিসিএসের সভাপতি ডা. নাফিসুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রবাসে আছি। দেশ থেকে অনেক দূরে থাকি। কিন্তু তারপরও লালা–সবুজকে ধারণ করি। আমরা যেখানেই যাই বাংলা সাংস্কৃতিকে ধারণ করার চেষ্টা করি।’
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসোল জেনারেল এসএম নাজমুল হাসান।
এছাড়া বৈশাখী আড্ডার আহবায়ক হিসেবে ছিলেন আরিফ আহমেদ অর্ণব। আর সদস্য ছিলেন ফাতেমা খান, মো. শানু, মাহবুব এম কবির, মো. শফিকুল ইসলাম, সায়েদা হাবীব, একেএম শামসুজ্জামান পিন্টু, মনজুর কাদের, আনোয়ার পারভেজ, সোহেল আহমেদ ও সেলিনা শারমিন।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন এনবিসিএসের সভাপতি ডা. নাফিসুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হেলালআলম (টিটু)।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন এনবিসিএসের সিনিয়র সহ–সভাপতি মাহবুব কবির, সহ–সভাপতি ডা. রেজাউল কবির, যুগ্ম সম্পাদক মো. শানু, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আরিফ আহমেদ (অর্ণব), সাহিত্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মঞ্জুর কাদের, অর্থ সম্পাদক এমডি. শফিকুল ইসলাম, সহ অর্থ সম্পাদক সৈয়দা হাবীব, শিক্ষা সম্পাদক সেলিনা শারমিন, যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক সাইফ খান।
আরও উপস্থিত ছিলেন এনবিসিএসের কার্যকরি সদস্য আশরাফুজ্জামান, একেএম শামসুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, আনোয়ার পারভেজ ও ফাতেমা খান।
এনবিসিএসের উপদেষ্টা কমিটির মধ্যে ছিলেন মোহাম্মদ মোমেন ভূঁইয়া, মো. আজহার আলী খান, আওকাত হোসাইন খান, মোহাম্মদ তৈয়বুর রহমান, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, সুজাউদ্দীন মোল্লা, হানিফ মজুমদার, সৈয়দ মিজানুর রহমান, ডা. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
ভিডিও দেখুন…..