রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটের ইজারার টাকা পরিশোধ না করেই হাসিল আদায়ের অভিযোগ ওঠেছে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ওরফে ডিপজলের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগের পরও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ডিপজলের জামানত বাজেয়াপ্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো ডিপজল ইজারার টাকা পরিশোধ না করেই তার লোকজন দিয়ে হাট পরিচালনা শুরু করেছেন। হাটের প্রবেশপথে ইজারাদার হিসেবে ডিপজলের ব্যানার দেখা গেছে।
এমনকি উচ্চ আদালতে হাটের ইজারা নিয়ে রিট হলে আদালত সর্বোচ্চ দরের টাকা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতার কাছ থেকে জমা নেওয়ার অনুমতি দিয়ে হাট হস্তান্তরের আদেশ দিলেও ব্যবস্থা নেয়নি করপোরেশন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দাবি, নির্ধারিত সময়ে ইজারার টাকা পরিশোধ না করায় ডিপজলকে ইজারার কার্যাদেশ ও হাট হস্তান্তর করা হয়নি। তাদের নিজস্ব কর্মীরাই হাটের হাসিল আদায় করছেন।
ডিএনসিসি সূত্রে জানা যায়, ২ ফেব্রুয়ারি গাবতলী পশুর হাটের ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেয় ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ। দরপত্রে অংশ নেওয়া দুই ব্যক্তির মধ্যে ডিপজলের প্রস্তাবিত ইজারামূল্য ছিল সর্বোচ্চ ১৭ কোটি ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। আর আগের ইজারাদার লুৎফর রহমান দর দিয়েছিলেন ১৬ কোটি ২০ লাখ টাকা।
দরপত্র যাচাই শেষে ২১ মার্চ সর্বোচ্চ দরদাতা ডিপজলকে ইজারামূল্যের সঙ্গে অন্যান্য ফি পরিশোধ করতে চিঠি দেয় ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ। চিঠিতে দরপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া জামানতের ৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা বাদে আরও ১৭ কোটি ২৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা সাত কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয়। কিন্তু ডিপজল নির্ধারিত সময়ে পুরো টাকা পরিশোধ না করে ৩১ মার্চ উত্তরের মেয়র বরাবর টাকা জমা দেওয়ার সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। সময় চান হাট হস্তান্তরের আগের দিন, অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যেও পুরো টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হন ডিপজল।
ডিপজলের ভাতিজা দেওয়ান মোহাম্মদ ইকরাম বলেন, হাটের বর্তমান ইজারাদার তার চাচা ডিপজল। সিটি করপোরেশন ১৫ এপ্রিল তাদের কাছে হাট বুঝিয়ে দিয়েছে। ওই দিন থেকেই তারা হাসিল আদায় করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ডিপজল গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি সিটি করপোরেশন ও তার নিজস্ব ব্যাপার।
এদিকে উচ্চ আদালতে হাটের ইজারা নিয়ে রিট করলে আদালত সর্বোচ্চ দর জমা দিয়ে হাটটি লুৎফর রহমানের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেন।
লুৎফর রহমান বলেন, আদালতের আদেশের অনুলিপি ও হাটের জন্য ব্যাংক পে-অর্ডারের সঙ্গে আবেদন নিয়ে তিনি সিটি করপোরেশনে গিয়েছিলেন। কিন্তু আবেদন গ্রহণ করা হয়নি।
উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম বলেন, ইজারাদারকে এখনো কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। কারণ কিছু টাকা বাকি আছে। ওই টাকা যত দ্রুত সম্ভব পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।